চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৫০০ জন। আর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব হ্রাসকরণ ও চিকিৎসা সেবা সুসমন্বিতকরণ’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটির মেয়র ফজলে নূর তাপস ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম উপস্থিত ছিলেন।

পরিসংখ্যানগত তথ্য তুলে ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আগের ২৩ বছরে যত ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছে গত ২০২৩ সালেই তার থেকে বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছে। অর্থাৎ গত ২৩ বছরে দেশে মোট ডেঙ্গু রোগী ছিল প্রায় আড়াই লাখ। কিন্তু গত ২০২৩ সালে মাত্র এক বছরেই রোগী আক্রান্ত হয় প্রায় ৩ লাখ। এই সংখ্যা শুধু হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের। এর বাইরে তো আরও রোগী ছিলই। এতেই বোঝা যায়, ডেঙ্গু রোগী নিয়ে আমাদের এবার আগে থেকেই সতর্ক না হয়ে কোনো উপায় নেই।

পূর্ব প্রস্তুতির তাগিদ দিয়ে সামন্ত লাল সেন বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলে আমাদেরকে এক দিকে যেমন মশা মারতে হবে, আবার অন্যদিকে প্রাদুর্ভাব কমাতে আগে থেকেই সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। সবার আগে আমাদের নিজ নিজ এলাকার কমিউনিটি সম্পৃক্ততা ও সচেতনতা বাড়াতে হবে। মশা মারার জন্য ওষুধ যেমন মানসম্পন্ন কিনতে হবে, তেমনি আমাদেরকে ভালো ট্রিটমেন্ট ব্যাবস্থাও রাখতে হবে। তবে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আজ থেকে যেভাবে উদ্যোগ নেওয়া শুরু হলো, এটিকে চলমান রেখে সব সেক্টরকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

সিটি করপোরেশনের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে লার্ভার তথ্য জানতে হবে। নিয়ম না মানলে জরিমানার ব্যাবস্থা করতে হবে। দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় যারা বাঁধা হবে তাদেরকে জরিমানা করাসহ আরও কঠোর নিয়ম হাতে নিতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, এ বছর ঢাকার তুলনায় ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। ঢাকার তুলনায় এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫৬৬ জন। এর মধ্যে ঢাকা শহরে ৫২৭ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ৩৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর পরে ১৮ মার্চ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২০ জন। এর মধ্যে ঢাকা শহরে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ জন এবং ঢাকার বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ জন।